ইমাম আহম্মদ (র) বলেন, জা’ফর ইবন আওন (র)….তিনি বলেন, উমর ইবনুল খাত্তাব (রা)-এর কাছে জনৈক ইয়াহুদী ব্যক্তি এসে বলল, আমীরুল মু’মিনীন! আপনারা আপনাদের কিতাবে একটি আয়াত তিলায়াত করে থাকেন।
সে রকম একটি আয়াত আমাদের ইয়াহুদী সমাজের জন্য নাযিল হলে আমরা ঐ (আয়াত নাযিল হওয়ার) দিনটিকে ঈদ দিবস রূপে পালন করতাম।
উমর (রা) বললেন, সেটি কোন আয়াত? ইয়াহুদী বলল, আল্লাহ্ তা’আলার বাণী:
“আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাংগ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করলাম।”
সুরা মায়েদাহ-৩
উমার (রা) তখন বললেন, আল্লাহর কসম! আমি যথার্থ ভাবে সে দিনটির কথা জানি যে দিন এ আয়াত রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর প্রতি নাযিল হয়েছিল এবং সে বিশেষ মুহূর্তটিও জানি যখন তা রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কাছে নাযিল হয়েছিল।
—সেটি ছিল জুমু’আর দিন আরাফার বিকেল বেলা। বুখারী (র) এটি রিওয়ায়াত করেছেন হাসান ইবনুস-সাবাহ (র)….হতে এবং বুখারী অন্য এক রিওয়ায়াতে এবং মুসলিম, তিরমিযী ও নাসাঈ (র) কায়স ইবন মুসলিম (র) হতে বিভিন্ন সূত্রে ঐ সনদে উদ্ধৃত করেছেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়াঃ ৫ম খন্ড, ২৯৬-২৯৭ পৃঃ)
আরাফার দিনের ফযিলত অনেকে বর্ণনা করে। আর এই দিনটি ও পরবর্তী ঈদের দিন অন্যতম আনন্দের দিন। কারণ হল দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে এবং উম্মতে মোহাম্মদ (সাঃ)-কে সর্বোত্তম সংবিধান আল কুরআন দেওয়া হয়েছে এবং যারা এই দ্বীনকে অনুসরণ করবে তারাই হবে সর্বোত্তম উম্মত।
এখন যারা কথায় কথায় বলে – সর্বক্ষেত্রে কেন দ্বীনকে টেনে নেওয়া হয়!! রাষ্ট্র হতে দ্বীনকে আলাদা করতে চায় – তারা যতই অর্থ ব্যয় করুক না কেন – তারা আসলে আরাফার দিনের ফজিলত ও কুরবানির প্রকৃত মর্ম বুঝেনি।
আমরা এমন কোন দ্বীন মানছি না যা অসম্পূর্ণ, এমন কোন ব্যক্তির আর্দশ মানছি না যার অনুসারীরা তার নিয়মনীতির পরিবর্তন ও সমালোচনা করে। তারা ক্ষমতার জন্য স্বীয় আদর্শ নেতার দল পরিবর্তন করে বরং মুমিনরা রসুলের (সাঃ) আদর্শ মেনে চলে যা ১৪০০ বছরের চেয়ে বেশি সময় অপরিবর্তনীয়। মুমিনরা তাদের আদর্শ রসুলের (সাঃ) সুন্নাহ মেনে চলাকে নিজের জীবনের সৌভাগ্য মনে করে। যা কিছু ইসলামের বিপরীত তা পরিতাজ্য যা কিছু ইসলামের সাথে মিল রয়েছে তা মেনে চলাই সুন্নাহ।
আল্লাহ বলেন-
“তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত প্রাণী, রক্ত ও শূকরের গোশত এবং যা আল্লাহ ভিন্ন কারো নামে যবেহ করা হয়েছে; গলা চিপে মারা জন্তু, প্রহারে মরা জন্তু, উঁচু থেকে পড়ে মরা জন্তু অন্য প্রাণীর শিঙের আঘাতে মরা জন্তু এবং যে জন্তুকে হিংস্র প্রাণী খেয়েছে- তবে যা তোমরা যবেহ করে নিয়েছ তা ছাড়া, আর যা মূর্তি পূঁজার বেদিতে বলি দেয়া হয়েছে এবং জুয়ার তীর দ্বারা বণ্টন করা হয়, এগুলো গুনাহ। যারা কুফরী করেছে, আজ তারা তোমাদের দীনের ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে। তবে যে তীব্র ক্ষুধায় বাধ্য হবে, কোন পাপের প্রতি ঝুঁকে নয় (তাকে ক্ষমা করা হবে), নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”
সুরা মায়েদাহ -৩
তাই কাফেরদের ষড়যন্ত্রে ভয় না পেয়ে – আল্লাহকে ভয় করে দ্বীন ইসলামে ফিরে আসুন, ওরাই হতাশ হয়ে যাবে।
আর আশাবাদী হোন!! ইনশাআল্লাহ পূর্নাঙ্গ দ্বীন ইসলাম পুরো দুনিয়াতে ছড়াবেই। নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য।