মাননীয় ফেরাউন, মাননীয় আবু জাহেল, মাননীয় হেরাক্লিয়াস আপনারা ইসলামী আইন চালু করুন! আপনাদের হাতে খেলাফাহর বায়াত নিচ্ছি। নবী, সাহাবীরা কি এভাবে বলেছেন নাকি আগে ফেরাউন, নমরুদদের ইসলাম গ্রহণ করার আহ্বান দিয়েছেন? ওরা যদি ইসলাম গ্রহণ করতো রসুলদের নেতৃত্ব মেনে চলতো। নবী, রসুল ও সাহাবীরা নেতৃত্ব দিত বা খলিফা হতো। কারণ ইলম ও আখলাক দিয়ে সর্বোত্তম ব্যক্তি মুসলিমদের শাসক হবে এটাই নিয়ম।
আল্লাহ বলেন-
“নিশ্চয় আমি প্রত্যেক জাতির নিকট রাসুল প্রেরণ করেছি, তারা যেন শুধু আল্লাহর ইবাদত করে এবং তাগুতকে বর্জন করে। (সুরা নাহল-৩৬)
আল্লাহ পাক বলেন-
“দ্বীনের মধ্যে কোন জবরদস্তী নেই। নিশ্চয় সঠিক পথ ভুল পথ হতে পৃথক হয়ে গেছে। সুতরাং যে তাগুতকে অস্বীকার করে, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করে, তাহলে সে এমন মজবুত হাতল ধরল যা কখনো ভাঙ্গবে না এবং আল্লাহতায়ালা হচ্ছে সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” (সুরা বাকারাহ- ২৫৬)।
আর যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তার মাধ্যমে ফয়সালা করে না, তারাই কাফের, জালেম। (সুরা মায়েদাহ- ৪৪, ৪৫)। সুরা নিসার ৬০ নং আয়াতে বর্নিত- “এবং তারা ফয়সালার জন্য তাগুতের কাছে যেতে চায়, যদিও তারা তাগুতকে প্রত্যাখান করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে। কিন্তু শয়তান তাদের সুদূর বিপথে নিয়ে যেতে চায়।”
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-
“তারা তাদের পন্ডিত ও ধর্মগুরুদের রব হিসেবে গ্রহণ করেছিল।” (সুরা তওবা, আয়াত ৩১)।
যদিও খ্রিষ্টানরা তাদের ধর্মগুরুদের সিজদাহ দিত না কিন্তু আল্লাহর আইনের পরিবর্তে তাদের আইন মেনে নিয়েছিল। এভাবেই আল্লাহর বদলে ধর্মগুরুকে বিধানদাতা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়। আজও যারা আল্লাহর আইনের বদলে কোন মানবরচিত আইনকে খুশি মনে মেনে নেয় এবং এসব আইন প্রণেতাকে সমর্থন, প্রশংসা, সাহায্য করে তারা এর মাধ্যমে তাগুতের আনুগত্য করছে।
নবী, রসুলরা যারা রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহর আইন ব্যতীত মানবরচিত আইন চালু রেখেছিল তাদের বিরোধীতা করতো, ঈমান আনলে জান্নাতের সুসংবাদ ও কুফর, শির্কে অটল থাকলে জাহান্নামের ভয় দেখাতো।
কুরআনে এসেছে –
হে নবী! অবশ্যই (আল্লাহ) আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। (সুরা আহযাব -৪৫)
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-
‘বলুন! এটাই আমার পথ। আমি (মানুষকে) আল্লাহর দিকে ডাকব’ (সূরা ইউসুফ- ১০৮)।
অন্যত্র বর্নিত হয়েছে ,
‘আর তার কথার চেয়ে কার কথা অধিক সুন্দর যে (মানুষকে) আল্লাহর দিকে ডাকে এবং নেক কাজ করে, আর বলে আমি মুসলিম’ (সূরা ফুসসিলাত-৩৩)।
আল্লাহ বলেন-
হে আমার জাতি! আমার কী হলো, আমি তোমাদের ডাকছি মুক্তির দিকে আর তোমরা আমাকে ডাকছ দোজখের দিকে’ (সূরা গাফির-৪১)।
যে কারনে নমরুদ, ফেরাউন, আবু জাহেলরা নির্যাতন করেছিল। আমরা এখন যেভাবে ইসলামী আইন চালু করতে চাই – সেখানে তাগুতের বিরুদ্ধে বলে তাকে ইসলামের দিকে দাওয়াহ দিয়ে নয়। বরং তাকে মাননীয় বলে (অথচ মাননীয় মানে যাকে মেনে চলতে হবে, তাগুতের প্রশংসা ও তাকে মেনে নেওয়ার স্বীকৃতি দিলে ঈমান থাকবে কি?) ও তার সহযোগিতা করে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা করবে। একজন ব্যক্তি যদি সত্যিই ইসলামকে ভালোবাসে তাহলে ব্যক্তিজীবনে ও ক্ষমতা থাকলে রাষ্ট্রীয়জীবনে ইসলাম কায়েম করবে।
আর নাহয় জনগনের চাপে বা জনপ্রিয়তার জন্য কিছু নিয়ম এনে (মসজিদ, মাদ্রাসা করা, কিছু ইসলামী নামকরণ করে) জাতিকে ধোকা দিবে আর প্রকৃত ইসলাম চাওয়া লোকগুলোকে মিডিয়াসহ, দরবারী আলেমদের দিয়ে উগ্রবাদী ঘোষণা করবে।
আজকে দেখবেন – অনেকে নিজ হাতে আইন তুলছে নিজের মনমতো বিচার করছে কয়জন উগ্রবাদ বলছে তাদের!? যে শিক্ষক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে তাকে বাধ্যতামূলক পদত্যাগ করাচ্ছে, শাস্তি দিচ্ছে। অথচ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাপ শির্ক। তাগুত হলো সবচেয়ে মহাপাপী, আজ ওদের অফসারন করে প্রকৃত ইসলাম চাইলে বা প্রকৃত আলেমদের ক্ষমতা চাইলে অনেক নামধারী মুসলিমই উগ্রবাদ বলবে!?
কিছু নিয়মনীতি পালনে সুবিধা পাওয়া মানুষ মুক্ত ভাবছে- আসলে শিক্ষক অফসারন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের অনুমতি দিয়েছে কিন্তু সুদ, মদ, পরকিয়া তার চেয়ে ভয়াবহ অপরাধ। দেখি সুদের ব্যাংকগুলো বন্ধ করতে যান, বৈধ মদ, পতিতালয় বন্ধ করতে যান, সিনেমা হল বন্ধ করতে যান, জাতীয় সংগীতের বিরোধিতা করেন। রসুলের গালিদাতা ও জেনা, পরিকয়ায় লিপ্তদের ইসলামী আইন দ্বারা শাস্তি দেওয়ার দাবি করেন বা কার্যকর করেন, দেখুন কি হয়! নিশ্চয়ই রসুলকে অপবাদ,গালি দেওয়া দুর্নীতির চেয়েও বড় পাপ।
তখন বুঝবেন কতটা মুক্ত ও ইসলাম পালন সম্ভব!?
একই শাসকগোষ্ঠী সুদ, বৈধ মদের ব্যবসা বাঁচাতে কঠোরতা অবলম্বন করে। জেনা, পরকীয়াকারীদের এমনকি হয়তো নাস্তিকদের রক্ষায় উল্টো মুমিনের উপর কঠোর হবে। কারন অনেকের নিকট জেনা নিত্য ব্যাপার আর পরীকীয়ায় অনেক বড় বড় পদের লোকেরা লিপ্ত।
কিছু মূর্তি ভেঙ্গেছে ঠিকই কিন্তু শহীদ মিনার ও স্বাধীনতার চেতনার নামে মূর্তির বিরোধিতা করলে দেখবেন প্রকৃত রুপ কি! শাসকগন আমাদের আবেগ দিয়ে ক্ষমতায় আসে, এরপর ক্ষমতা পরিপক্ব হলে জালেম হয়ে উঠে। পরিশেষে, আমরা শুধু সতর্ককারী। আপনারা দ্বীন না মানলে কারো কোন ক্ষতি নেই আর দ্বীনে ফিরলে রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ। ভ্রান্ত নীতি ছেড়ে উম্মাহ ইসলামের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হোক এই দোয়া করি।