আল্লাহ তওবাকারীর সম্মান রক্ষাকারী

আমরা সবাই পাপী। এটা আল্লাহর রহমত তিনি আমাদের পাপ ঢেকে রেখেছেন, নাহলে পৃথিবী হতে বিশ্বাসটা বিলুপ্ত হয়ে যেত। আল্লাহর রহমত হল তিনি শুধুমাত্র ক্ষমা করেন না বরং তওবাকারীর গোনাহ লুকিয়ে রেখে তার সম্মান রক্ষা করেন।ইবনে কাতামাহ হতে বর্নিত- “মুসা (আঃ) এর জমানায় সময় খরা দেখা দিল। লোকজন মুসার (আঃ) কাছে অনুরোধ করলেন তিনি যেন বৃষ্টির জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করেন।তাই মুসা (আঃ) ৭০ হাজারের বেশি লোক নিয়ে মরুভূমিতে চলে গেলেন এবং দুআ করলেন- “হে আল্লাহ আমাদের নিকট বৃষ্টি বর্ষন করুন ও আপনার দয়া ও করুণা ছড়িয়ে দিন। হে আল্লাহ, এসকল জীব প্রাণী ও বৃদ্ধ লোকদের উছিলায় আমাদের প্রতি দয়া করুন।” কিন্তু কোন বৃষ্টিপাত হলো না বরং সূর্যের তাপ যেন আরো বেশি প্রখর হল। মুসা (আঃ) অনবরত দুআ করতে লাগলেন, “হে আল্লাহ আমাদের মাঝে বৃষ্টি বর্ষন করেন।” আল্লাহ বললেন- “আমি কি করে বৃষ্টি দেই যেখানে তোমাদের মাঝে আমার এক বান্দা উপস্থিত রয়েছে যে চল্লিশ বছর যাবত অবাধ্য হয়ে জীবন যাপন করেছ?” মুসা (আঃ) লোকজনদের ডেকে বললেন- “হে অবাধ্য বান্দা যে চল্লিশ বছর যাবত আল্লাহর আদেশ অমান্য করে আসছো, আমাদের মধ্য হতে চলে যাও কেননা তোমার কারণে আমাদের মাঝে বৃষ্টি বর্ষন হচ্ছে না।” অবাধ্য লোকটি দাড়াল ডানে বামে তাকালো ভাবলো কেউ হয়তো সামনে এসে দাড়াবে কিন্তু কেউ এল না। লোকটি বুঝল অবাধ্য ব্যক্তিটি সেই, সেই বুঝতে পারল সে যদি ওদের মাঝে থাকে সবাই খরাই মারা যাবে আর সে যদি এখান হতে চলে যায় পাপী হিসেবে পরিচিত হবে, অপমানিত হবে। সে আন্তরিকভাবে তওবা করলেন আর আল্লাহর নিকট পাপ গোপন করার দোয়া করলেন। মুসা (আঃ) ও তার উম্মত অপেক্ষা করছিলেন পাপী ব্যক্তিটি বের হয়ে চলে যাবে কিন্তু আল্লাহর রহমতে সাদা মেঘ জমা হয়ে বৃষ্টি বর্ষিত হল। মুসা (আঃ) অবাক হয়ে গেলেন ও বললেন- “হে আল্লাহ আপনি বৃষ্টি বর্ষন করলেন অথচ পাপী বান্দা এখনো বের হয়নি।” আল্লাহ বললেন- “আমি সেই পাপী বান্দার তওবার কারণে বৃষ্টি দিয়েছি।” মুসা (আঃ) বললেন- “হে আল্লাহ, সে সৌভাগ্যবান বান্দাকে দেখার তওফীক দেন।” আল্লাহ উত্তর দিলেন- “যখন সে পাপ করেছে তখন আমি তা গোপন রেখেছি, এখন সে তওবা করার পর কিভাবে তাকে তোমার নিকট প্রকাশ করি?” (মুসনাদে আহমদ)।” দেখুন, কিভাবে আল্লাহ পাপকে গোপন রেখে তার বান্দার সম্মান রক্ষা করেন। তাই জীবনে কখনও যদি এমন মুহূর্ত আসে মনে হয় সবার সম্মুখে অপমানিত হতে পারেন তখন নিরাশ না হয়ে তওবা করুন। হয়তো এটাই আল্লাহর রহমতে নাজাত পাওয়ার উছিলা। খেয়াল করুন, মুসা (আঃ) বলেছিলেন সৌভাগ্যবান ব্যক্তিকে দেখতে চায়। হয়তো আমরা বলতাম পাপী ব্যক্তিটা কে জানতে চাই। কারণ তওবা করার পর লোকটা পবিত্র আর আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত ও সম্মানিত। আল্লাহ তাআলা বলেন- “বল হে আমার বান্দাগন! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করছো- আল্লাহর অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ো না, আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দিবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সুরা যুমার)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *