সালাতের সালাম ফিরিয়ে যদি দেখেন আপনার পাশের মুসল্লী সেই যে ইসলাম মানা ও প্রচারের কারণে আপনার উপর জলুম করছে, অপবাদ দিচ্ছে। নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত সালাত ছেড়ে দিলে মুসলিম থাকে না বা ইসলাম হতে বের হয়ে যায় এই কথা বলার কারণে আপনাকে উগ্রবাদী বলেছে, গালি দিয়েছে সে মসজিদে আজ আপনার আগেই এসেছে!!
আহ ইসলাম!! মুমিন, মুনাফেক একই কাতারে, পাশাপাশি অথচ একজন তাগুতের বিরুদ্ধে আর আরেকজন তাগুতের এজেন্ট।
একটু সামনে দেখেন আপনার সেই পরম আত্মীয় যে আপনাকে প্রাপ্য অধিকার দেওয়া হতে বিরত রেখেছে। এরপর একটু পিছনে তাকালেন, দেখলেন একসময়ের পরম বন্ধুরা (যাদের কাছে আপনি সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন)।
ইসলামে ফিরার কারণে যাদের উপহাস শুনতে হয়েছে শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গ ছাড়তে হয়েছে।
এরপর মসজিদ হতে বের হয়ে দেখলেন ঈমাম সাহেব পেটমোটা হারামখোর তাগুতের প্রতিনিধিদের মোটাসোটা পশু দিয়ে কুরবানির জবাই সূচনা করলো অন্যরা ভিডিও করছে, কেউ ফেইসবুকে দিচ্ছে প্রশংসা পাচ্ছে। অন্যদিকে হালাল টাকায় কেনা মুমিনের ছোট ছাগলটা অবহেলা ও উপহাসের শিকার হয়!!
কুরবানির মাংস বন্টনের সময় দেখলেন – যে লোক নিজ স্বজনের জমি, ব্যবসা দখল করে নিয়েছে, সেই গরিবকে মাংস বিলানোর নামে নিজেকে দানশীল প্রমানে ব্যস্ত!!
গরিবের দল অপমান, ধাক্কাধাক্কি করে কিছু মাংস পেলেও মধ্যবিত্ত কিছু টাকা জমিয়ে রেখেছে গরিবের কাছ হতে মাংসগুলো কিনবে বলে!! চোখলজ্জায় কারো কাছে চাইতে পারে না। কিন্তু সন্তানগুলোকে একবেলা ভালো খাবার দিতে মন চায়। কুরবানির পশু দেওয়ার আনন্দে ধনী আত্মীয়রাই তাকে শরীক করেনি অর্থ নেই বলে। পেটে ক্ষুধা নিয়ে মানুষ ঘুরছে চারপাশে আর একদল ব্যস্ত গরুর ওজন কত হয়েছে, প্রতি কেজি মাংস কত টাকা পড়লো আর নিজ ফ্রীজে জায়গা হবে কি! এই সমীকরনে ব্যস্ত।
অথচ- হজরত সালামা ইবনে আকওয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের যে লোক কুরবানি করেছে, সে যেন তৃতীয় দিনে এমন অবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কুরবানির গোশতের কিছু থেকে যায়।
পরবর্তী বছর সাহাবিগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তেমন করব, যেমন গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি (রাসুলুল্লাহ) বললেন-‘তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ। কারণ গত বছর মানুষের মধ্যে ছিল অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম, তোমরা তাতে সহযোগিতা কর।’ (বুখারি, মুসলিম)।
তাই যখন অভাব অনটন চারপাশে বিদ্যমান তখন তিনদিনের বেশি গোশত না রাখাটাই উত্তম।