আমাদের অশ্রুগুলো সস্তা হয়ে গেছে

আমরা সস্তা আবেগে অশ্রু ঝরাই অথচ বড় ক্ষতির কথা আমরা ভুলে যাই। ক্ষমতাবান, ধনী স্বজনের প্রতি আমাদের বিশ্বাস, ভরসা বেশি তার কাছে চাই বারবার অথচ অমুখাপেক্ষী বিশ্বজাহানের রব আল্লাহর কাছে চাইতে আমরা কৃপণতা করি। অথচ আল্লাহ পরমদাতা। প্রিয় নবী সোলাইমান (আঃ) দুআ করেন- “হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে দান করুন এক রাজ্য যা আমার পরে কেউ হাসিল করতে পারবে না, নিশ্চয় আপনি পরমদাতা। (সুরা সাদ-৩৫)। আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন, সোলাইমান (আঃ) এর রাজত্বের তুলনায় আমাদের প্রয়োজন অনেক ছোট। তাহলে আল্লাহর কাছে আমাদের প্রয়োজন চাইতে অলসতা কেন? অনেক তরুন দেখেছি প্রেমিকার বিরহে অশ্রু ঝরায়, অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষার টেনশনে উদ্বিগ্ন থাকে, কত পিতা তার সন্তানের হতে ২-১ মাস দূরে থাকলে অন্তরে চরম বেদনা অনুভব করে, তাকে দেখার জন্য বাড়ি ফিরতে চায়, ভিডিও কলে সন্তানের মুখ দেখে সাময়িক তৃপ্তি পায় অথচ হাশরের পরীক্ষার চিন্তা আমাদের কারো আসে না, পরমকরুণাময় আল্লাহকে দেখার জন্য আমাদের অন্তর কাঁদে না। জান্নাতে তার সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য আমাদের চোখে অশ্রু ঝরে না, সালাতের মাধ্যমে তার নৈকট্য লাভ করতে চাই না।সামান্য ব্যাথা হলে শিশুটি মায়ের কাছে ছুটে যায় এই ভেবে মা তার ব্যাথা ভুলিয়ে দিবে অথচ মা সান্তনা ছাড়া কিছুই দিতে পারে না। আমরা আজ শিশুর চেয়ে অজ্ঞ হয়ে গেছি, নিজের দুঃখ, কষ্ট, সমস্যার জন্য দু রাকাত নফল সালাত পড়ে আল্লাহর কাছে চাই না, বরং দুঃখ-বেদনা, সমস্যাগুলো এমন মানুষের কাছে তুলে ধরি যে নিজের দুঃখ দূর করতে পারে না, সমস্যার সমাধান করতে পারে না। আল্লাহ বলেন- “আর যদি আল্লাহ আপনাকে কোন দুদর্শা স্পর্শ করান, তবে তিনি ছাড়া তার দূরকারী কেউ নেই। আর যদি তিনি আপনাকে কোন কল্যাণ দেন, তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। আর তিনিই তার বান্দাদের উপর ক্ষমতাবান। (সুরা আনআম- ১৭-১৮)। আমাদের অশ্রুগুলো অনেকের কাছে অতি তুচ্ছ, কিন্তু অতি মূল্যবান আল্লাহর কাছে। অশ্রুসিক্ত নয়নে, অনুতপ্ত হৃদয়ে দুআ করলে আল্লাহ আমাদের দুআ কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। ইবলিশও বুঝেছিল দুআ কবুলকারী কেবল আল্লাহ, তিনি কৃপণ নন কিন্তু আমরা আজও বুঝি না। সে আল্লাহর কাছে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত অবকাশ চেয়েছিল, কবুলও হয়েছিল (সুরা আরাফ)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *