একই দেশে, একই সমাজে আমাদের বেড়ে উঠা। একই মেঠোপথ, সড়ক, রাজপথে চলে, একই স্কুল-মাদ্রাসায় আমাদের পড়াশোনা। একই মাঠে খেলাধুলা ও আড্ডা, একই নদী-পুকুরে আমাদের আনন্দ গোসল। একই আযান শুনে একমাত্র রসুলকে (সা:) আদর্শ মেনে একই ঈমামের পিছনে কাতারবন্দী সালাত পড়া। জুমা, ঈদে গলা গলা মিলানো কিন্তু বড় হয়ে কেন আমরা একে অপরের গলা কাটতে চাই।
কাদের ক্ষমতা দিতে আমাদের ভাই – বন্ধুরা একে অপরের শত্রুতে পরিণত হলাম। এসব নেতারা ক্ষমতা পেলে নিজেদের ফায়দা লুঠে। ক্ষমতা হারালে আপনাদের অসহায় ফেলে পালায়। কাদের ক্ষমতা দিতে ভাই ভাইয়ের জীবন নিতে চায়, দিতে চায়। এসকল ক্ষমতালোভী কাপুরুষ নেতাকর্মীদের!? যারা ব্যক্তি ও পরিবারিক জীবনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেনি।
আশা করেন কিভাবে – তারা রাষ্ট্রে ইনসাফ আনবে? আর ইসলাম ভিন্ন অন্য কোন বিধান দ্বারা জুলুমমুক্ত হবে? ইনসাফ আশা করলো অথচ সেই দ্বীন ইসলামকে অস্বীকার করলো।
কারণ আল্লাহ একমাত্র ইসলামকেই আদল ও ইনসাফের জন্য পাঠিয়েছেন।
যারা ভাবছেন আপনাদের নেত্রী/নেতা আপনাদের কল্যাণ, মুক্তি দিবে। অথচ নারী নেতৃত্ব দ্বারা রাষ্ট্রে কল্যাণ সম্ভব নয় তাহলে ইসলামী শরীয়তকে অস্বীকার করছেন না তো? আর রসুল, সাহাবীরা জীবন উৎসর্গ করেছেন দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য।
তারা বর্তমান নেতাকর্মীদের মত ভীরু, কাপুরুষ ছিলেন যে – ক্ষমতা পেলে জুলুম করে আর ক্ষমতা হারালে পালিয়ে যায়। বরং তারা জিহাদের নেতৃত্ব দিতেন সবার সম্মুখে। আমরা দাবি করি- আমাদের বড় শত্রু ভারত, ইসরাঈল, আমেরিকা। অথচ ওদের ধরিয়ে গণতান্ত্রিক আদর্শ মেনে আমরা তাগুতী নেতা কর্মীদের ক্ষমতায় বসাতে চায়। এই আদর্শের কারণে আমরা দলে দলে বিভক্ত, একে অপরের রক্তের নেশায় মত্ত।
আবার একদল পাবেন ইসলামে রাজনীতি আছে বলে এই বিভক্তির রাজনীতির প্রচার করে। অথচ ইসলামের রাষ্ট্রনীতি ও পশ্চিমাদের রাজনীতি সম্পূর্ন ভিন্ন। আগে নিজ সমাজ, মসজিদে ঈমাম ও সভাপতিসহ উপযুক্ত লোক নিয়োগ করুন। দেশের ঈমামরা মিলে নেককার একজনকে নেতা বানান। তাকে রাষ্ট্রক্ষমতা দেন তাহলে সমাধান হতো। আপনারা দলে দলে বিভক্ত থেকে কিভাবে জাতিকে ইসলামের ছায়াতলে একত্রিত করবেন?
আর একটু চিন্তা করুন- যতজন মুসল্লি আপনাদের পিছনে সালাত পড়ে, ওয়াজ শুনে। নির্বাচন হলে তাদের ভোটও পান না এটাই প্রমাণ করে গণতান্ত্রিক আদর্শ দ্বারা আপনারা আদৌ ক্ষমতা পাবেন না। যতদিন না উম্মাহর মধ্যে ইসলামিক চেতনার অভুদ্যয় ঘটে, সাহসী যুবকদের আবির্ভাব হয় যারা জানমাল দিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চাইবে।
আর কাদের ক্ষমতা দিতে জীবন দিবেন চিন্তা করুন- তাদের আদর্শ আপনাদের দুনিয়াতে বাচাতে অক্ষম, আখেরােতেও ক্ষতি ছাড়া কোন কাজে আসবে না বরং আপনারা তাদের শাস্তি কামনা করবেন।
আল্লাহ বলেন –
নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত। তথায় তারা অনন্তকাল থাকবে এবং কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।
যেদিন অগ্নিতে তাদের মুখমন্ডল ওলট পালট করা হবে; সেদিন তারা বলবে, হায়। আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম। তারা আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম, অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল। হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে মহা অভিসম্পাত করুন। (সুরা আহযাব ৬৪-৬৮)
যখন সমাজে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়নি তখন রসুল (সা:), সাহাবীরা (রা:) পারস্পরিক লড়াই, সংঘাত বন্ধ করার চেষ্টা করেন। আমাদেরও সেই ভূমিকা রাখতে হবে।
