আদর্শ মা

আমাদের ইতিহাস গৌরবের ইতিহাস। বিশ্বের বুকে আমরা এক আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথানত করতাম না। আমাদের মায়েরা ছিল সুমাইয়া (রাঃ), আসমা বিনতে আবুবকর (রাঃ), খানসা (রাঃ) এর মতো। যারা বীর সন্তান জন্ম দিয়েছিল। যারা ইসলামের জন্য নির্দ্বিধায় যেকোন আত্মত্যাগ স্বীকার করতে রাজি ছিল। তাই আমরা বিজয়ী ছিলাম। তখন মায়েরা চাইত ছেলেরা শহীদ হবে তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করবে। আর বর্তমান মায়েরা চায় ছেলে দুনিয়ায় দীর্ঘজীবি, সমৃদ্ধশালী ও সুখী হোক। কিন্তু দুনিয়া চিরস্থায়ী সুখের জায়গা নয়। হযরত খানসা (রাঃ) ছিল বিধবা নারী ও ঐতিহাসিকদের মতে মহিলা কবির মধ্যে সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ কবি। হযরত উমরের (রাঃ) শাসনকালে কাদেসিয়া যুদ্ধ সংগঠিত হয়। এ যুদ্ধে ইরানীরা বিপুল শক্তি নিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। হযরত খানসা (রাঃ) তার চারজন পুত্রসন্তান নিয়ে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি তাদের অনুপ্রেরণা দিয়ে বক্তব্য দেনঃ আমার প্রিয় সন্তানরা! তোমরা স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছ, স্বেচ্ছায় হিজরত করেছিল। সেই অবিনশ্বর আল্লাহর শপথ, যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। যেমনিভাবে তোমরা মায়ের গর্ভ হতে জন্ম নিয়েছ, ঠিক তেমনিভাবে তোমরা পিতার সত্য সন্তান। আমি তোমাদের পিতার সাথে প্রতারণা করিনি, তোমাদের মামাদেরকেও লাঞ্চিত করিনি। তোমাদের বংশধারা নিষ্কলুষ, নিষ্কলংক। তোমরা জানো, ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করার মধ্যে মুসলমানদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ হতে বিরাট সওয়াব। এ সত্য তোমরা ভালো করে হৃদয়ে গেথে নিবে। চিরস্হায়ী জান্নাতের তুলনায় নশ্বর দুনিয়া অতি তুচ্ছ, নগন্য। মায়ের উপদেশ অনুযায়ী তার সন্তানেরা বীরের মত যুদ্ধ করে শহীদ হন। যুদ্ধ শেষ হলে খানসা (রাঃ) তার সন্তানদের অবস্থা জিগাস করলেন- একজন বলল, আপনার সবগুলো সন্তান শহীদ হয়েছে। তিনি জিগাস করলেন- আঘাত কি তাদের বুকে লেগেছিল, না পিঠে? লোকটি বলল, বুকে। খানসা (রাঃ) বললেন আল্লাহর শোকর! তিনি আমার সন্তানদেরকে তার রাস্তায় শহীদ হওয়ার মর্যাদায় মর্যাদাবান করেছেন। আমি আল্লাহর কাছে আশা করি তিনি কাল কেয়ামতের ময়দানে সবাইকে তার রহমতের ছায়ায় রাখবেন। এই উম্মাহর বিজয় সেদিনই হবে যখন খানসা (রাঃ) এর মত মায়ের বীর সন্তান জন্ম দিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *